হাঁস পালন শুরু থেকে শেষ,Krishi Bangladesh 01784302963







প্রায় এক দশক ধরে পোলট্রি শিল্পে অব্যাহত লোকসানের কারণে বিকল্প হিসেবে ক্যাম্পবেল হাঁস পালন খামার গড়ে তুলছেন , রোগবালাইয়ের ঝুঁকি কম ও অল্প পুঁজিতে বেশি লাভ হওয়ায় এ জাতের হাঁস পালনে ঝুঁকছেন খামারিরা। বিসমিল্লাহ হাঁস ফার্মের পরিচালক শেখ সিরাজুল ইসলাম জানান, তিনি পুলিশের চাকরি থেকে অবসরে এসে বাড়িতে গরুর খামার করেন। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে অধিকাংশ গরু মারা যায়। এতে তিনি ৫-৬ লাখ টাকা লোকসানের সম্মুখীন হন। এর পর স্থানীয় এক ব্যক্তির পরামর্শে ক্যাম্পবেল হাঁস পালন খামার করার উদ্যোগ নেন। তিনি জানান, ভালো জাতের ক্যাম্পবেল হাঁস সংগ্রহ করতে উত্তরবঙ্গের পাবনা, নাটোর ও বগুড়া থেকে বাচ্চা এনে খামার তৈরি করেন। এর পর খামারে রেখে নার্সিং করে বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করেন। 






তাছাড়া তার খামারে বর্তমানে এক হাজারেরও বেশি হাঁস ডিম দিচ্ছে। এসব ডিম বিক্রি করেন সাতক্ষীরার সুলতানপুর বড় বাজারে। প্রতি ১০০ ডিম পাইকারি বিক্রি করেন ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকায়।বর্তমানে তার খামারে ৩ হাজার বাচ্চা এবং ২ হাজার বড় হাঁস আছে। এসব বাচ্চা তার নিজস্ব পরিবহনে জেলার বিভিন্ন গ্রামে সরবরাহ করেন। এভাবেই খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস বিক্রি করে এলাকায় সাড়া ফেলেছেন তিনি। কম পুঁজিতে বেশি লাভ হওয়ায় তার এলাকার আরো অনেকে খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস পালন করছে।বিসমিল্লাহ হাঁস ফার্মের ম্যানেজার নিখিল জানান, ক্যাম্পবেল হাঁসের রোগবালাই খুব কম হওয়ায় তেমন কোনো ওষুধের প্রয়োজন হয় না। তাছাড়া হাওর, বিল, নদী এলাকায় হাঁসের খামার করলে খাদ্য সাশ্রয় হয়।তিনি আরো জানান, ক্যাম্পবেল হাঁস পালনে খামারের আয়তন কম লাগে। প্রতিটি হাঁসের জন্য ২-৩ বর্গফুট জায়গা হলেই চলে। প্রতিটি বাচ্চার জন্য খরচ হয় ২০ থেকে ২৫ টাকা। খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস বছরে ২৮০-৩০০টি ডিম দেয়। তিনি বলেন, খামারের সব খরচ মিটিয়ে প্রতি মাসে প্রায় ৫০-৫৫ হাজার টাকা লাভ হয়। গৃহবধূ রাবেয়া বেগম জানান, সংসার দেখাশোনা করেও তিনি নিজবাড়িতে ছোট পরিসরে একটি ক্যাম্পবেল হাঁসের খামার করেছেন। তিনি জানান, সারা মাসে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ৭-৮ হাজার টাকা ডিম বিক্রি করে লাভ হয় তার। দুই বছর আগে খুলনা থেকে ১০০ ক্যাম্পবেল হাঁসের বাচ্চা সংগ্রহ করে তিনি এ খামার শুরু করেন। আগামীতে আরো বড় পরিসরে হাঁস পালন খামারের পরিকল্পনা রয়েছে তার। সাতক্ষীরা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শিশির কুমার বিশ্বাস বলেন, হাঁস পালন খামার খুবই লাভজনক শিল্প। এতে ঝুঁকি কম থাকায় জেলা শহরসহ আশাশুনি, কালীগঞ্জ ও শ্যামনগরে বাণিজ্যিকভাবে প্রায় ৩০০-৪০০ খামার গড়ে উঠেছে। তিনি জানান, এসব খামারিকে টিকিয়ে রাখা এবং উত্সাহ জোগাতে জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে সার্বিক সহায়তা দেয়া হচ্ছে। তাছাড়া ডাগপ্লেসহ অন্য সব ধরনের ভ্যাকসিন বা ওষুধ খামারিদের সরবরাহ করা হয়।

Share this

Related Posts

Previous
Next Post »

2 comments

comments
১৯ অক্টোবর, ২০১৯ এ ৪:০৪ PM delete

হাস ফামটির মোবাইল নম্বর লাগবে?

Reply
avatar